বোস হাউস : একটি সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত

সুভাষচন্দ্র বসু ও শরৎচন্দ্র বসু, ১৯৩৭

রিষড়ার এই বাগানবাড়িটি ছিল নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর দাদা শ্রী শরৎ চন্দ্র বসুর। বলা হয়ে থাকে যে, এ বাড়িটিতে সম্ভবত স্বয়ং নেতাজী পদার্পন করেছিলেন, যে কারণে এটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে (https://amritmahotsav.nic.in/district-reopsitory-detail.htm?22957)। কলকাতার পুলিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ২৪ নং পুলিশ ফাইল থেকে জানা যায়, ১৯৪১-এ নেতাজীর মহানিষ্ক্রমণের পর বাড়িটি নেতাজীর বার্তা পাওয়ার জন্য জাপানী কনস্যুলেতের সদস্যদের সঙ্গে বসু পরিবারের সংযোগ রক্ষার স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হতো। এই বাগানবাড়িতেই শরৎ বসু জাপানী কনসাল জেনারেল ওকাজাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। প্রথম সাক্ষাতের দিন কনসালকে এই বাড়িতে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে এসেছিলেন শিশির কুমার বসু। আরও জানা যায় যে, পরবর্তী কনসাল ওতা সস্ত্রীক এই বাড়িতেই শরৎ বসুর সঙ্গে দেখা করতে বেশ কয়েকবার এসেছিলেন। বিশেষ করে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের নজর এড়াতে শ্রীমতী ওতা শাড়ি পরে আসতেন, যাতে মনে হয় যে তাঁরা একটি পারিবারিক সমারোহে যোগ দিতে আসছেন। (সূত্র : মহানিষ্ক্রমণ — শিশির কুমার বসু, কলকাতা : আনন্দ পাবলিশার্স)। এই ধরণের অনেক ঘটনাই এই বাড়িতে ঘটেছিল, যে কারণে বাড়িটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষপর্বের গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়েছে।

ঐতিহাসিক 'বোস হাউস'-এর হস্তান্তর, ২০২৩

পরবর্তীকালে বসু পরিবারের উত্তরসূরীগণ বাড়িটি বিক্রি করে দেন এবং ঘটনাচক্রে ২০০৫ সালে শ্রী পরিতোষ মোহন চক্রবর্তী এই সম্পত্তির মালিকানা পান। অবশেষে ২০২৩ সালে শ্রী পরিতোষ মোহন চক্রবর্তী এবং শ্রীমতী চক্রবর্তী এই ঐতিহাসিক বোস হাউস্ সম্পত্তিটির পুনর্নির্মান করে এখানে একটি সংস্কৃতি ও শিক্ষার কেন্দ্র তৈরির মাধ্যমে স্বামী বিবেকানন্দ ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এটি রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠ, বেলুড় মঠকে দান করেন।

বোস হাউস ক্যাম্পাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করছেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক শ্রীমৎ স্বামী সুবীরানন্দজী মহারাজ, ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪

২০২৪ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক শ্রীমৎ স্বামী সুবীরানন্দজী মহারাজ সর্বসাধারণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে এই ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেন। বর্তমানে এটিকে কেন্দ্র করে রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠের নিয়ন্ত্রণাধীনে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির কলেজ তার দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কার্যকলাপ এগিয়ে নিয়ে চলেছে।